কর্মব্যস্ততায় মুখর আমাদের এই শহরে পরিবারের স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করে যাচ্ছেন পরিবারকে আরো সমৃদ্ধ এবং স্বচ্ছলতার জন্যে। আগের মতো আর মেয়েরা এখন ঘরে বসে নেই। পুরুষের সাথে সমান তালে তারাও চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য এইসব সেক্টরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
কিন্তু কর্মজীবী পুরুষের চাইতে কর্মজীবী মহিলাদের দায়িত্ব, কর্তব্য একটু বেশিই। তাদেরকে একই সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, পড়াশোনা এসবের পাশাপাশি আবার সংসারও দেখভাল করা লাগে। কিন্তু এতসব কাজ সামলে উঠার পরও আমাদের সমাজ এখনো নারীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে শিখে নি।
আসলে সমস্যাটা হচ্ছে আমাদের মানসিকতার, দৃষ্টিভঙ্গির আর স্বীকৃতি দেওয়ার অপারগতায়। এইসব কর্মজীবী নারীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হয় যাতে করে তাদের ক্যারিয়ার এবং সংসার দুটোই সমানতালে চলে কিন্তু কিছু কিছু জিনিস একটু সময় নিয়ে পর্যালোচনা করলে বা সেগুলো নিয়ে কাজ করলে খুব সহজেই নারীরা এই সমস্যার থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
তাই আসুন জেনে নিন কিভাবে সহজ উপায়ে সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা করে একই সাথে একজন দক্ষ এবং পেশাদারী কর্মী, একজন দূরদর্শী স্ত্রী, স্নেহ পরায়ণ অভিভাবক এবং পরিবার এবং সমাজের মধ্যমণি হতে পারবেন। উপায়গুলো নিম্নরূপঃ
১.ঘুম থেকে একটু আগে উঠুনঃদিনের শুরুটা যদি একটু আগে আগে করতে পারেন তাহলে সহজেই সারাটা দিন কি কি করবেন বা করতে হবে তার একটা ছক বা পরিকল্পনা আপনি সাজিয়ে ফেলতে পারবেন তাই চেষ্টা করুন কর্মজীবন শুরু হবার পর থেকে দিনের শুরুটা একটু আগে করতে তাতে করে পর্যাপ্ত সময় আপনি হাতে পাবেন।
২.দিনের শুরুতেই কাজ এগিয়ে রাখুনঃসকাল সকালেই চেষ্টা করুন রান্নাবান্না, ঘর গুছানো এধরণের গৃহস্থালি কাজ করে ফেলতে। রান্নাবান্নার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন পুষ্টিকর এবং সুষম, শর্করা জাতীয় খাবার রান্না করতে এতে করে পরিবারের সদস্যদের আপনার অনুপস্থিতিতে পুষ্টিহীনতায় ভুগতে হবে না। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে যাওয়া আসার ক্ষেত্রে দ্রুত যান ব্যবহার করুন। আপনার কর্মব্যস্ততার দরুন যাতে পরিবারের বাকী সদস্যরা হীনমন্যতায় না ভুগেন সেদিকে দৃষ্টি রাখুন।
৩.তালিকা করে সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করুনঃ
যে কোন কাজ করার আগে একটি তালিকা করার মাধ্যমে তা করলে যথাযথ এবং সুস্পষ্ট ভাবে করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রেও তার বিপরীত নয়। তাই চেষ্টা করুন তালিকা করার মাধ্যমে কোন কাজ কখন করবেন তার একটি অভ্যাস গড়ে তোলার। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো অতি দ্রুত এবং পেশাদারিত্বের সাথে করতে আপনি সক্ষম হবেন এবং অপেক্ষাকৃত কম দরকারী কাজ গুলো করতেও আপনি ভুলবেন না। তাই সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্যে এই অভ্যাসটি আস্তে আস্তে আয়ত্ত্ব করে ফেলুন।
৪.নিজের জন্য সময় বের করুনঃ
দিনের বেশিরভাগ সময়টুকুই নিজ কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে করতে এবং সংসার পরিবার সামলাতে সামলাতেই অতিবাহিত হয়ে যায়। কিন্তু এইভাবে একটানা কাজ করতে করতে দেখবেন একসময় আপনি হাঁপিয়ে উঠেছেন তখন অনেক বিষাদগ্রস্ত এবং নিজেকে দুর্বল অনুভব হবে। তাই চেষ্টা করুন যতোই কর্মব্যস্ত থাকুন না কেন দিনের কিছুটা সময় একেবারেই নিজের জন্য বরাদ্দ রাখুন। এই সময়টুকু একান্তই আপনার নিজের আর কারো নয়। এই সময়টুকুতে আপনি আপনার পছন্দের কাজ গুলো করুন। দিনশেষে উপলব্ধি করবেন এই সময়টুকু এবং সর্বোপরি সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে ঘরে এবং বাইরে আপনি একজন সফল ব্যক্তিত্ব।