একজন সুস্থ, সবল ও স্বাস্থ্যবান নারীর মুখের হাসি সব মায়েরই পরম আরাধ্য। তাই সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখানোর পূর্বেই কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ অত্যাবশ্যক।অন্যথায় গর্ভাবস্থায় বা শিশু জন্মের সময় বিভিন্ন ধরণের জটিলতার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
চলুন দেখে নেই প্রস্তুতিগুলো কিভাবে শুরু করতে হবে।
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন :
খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে এসময় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। ফাস্টফুড বা জাঙ্ক জাতীয় খাবার এসময় খাদ্যতালিকা থেকে একবারেই বাদ দিতে হবে। উপরন্তু সুষম খাদ্যতালিকার দিকে নজর দিতে হবে। প্রচুর শাক-সবজি, ফলমূল, প্রোটিন, পরিমিত আয়োডিন এসময় খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে। সঠিকভাবে রান্না করা এবং সুসিদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।তবে কিছু কিছু খাবার, যেমন-কাঁচা-পাকা পেঁপে, আনারস, সজিনা এসব পরিহার করতে চেষ্টা করতে হবে।
![]() | ![]() |
সঠিক জীবনচর্চা :
জীবনধারণের ক্ষেত্রে এসময় সুশৃঙ্খলতা বজায় রাখতে হবে।দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট এসময় ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।এই অভ্যাস আপনার প্রসবকালীন ব্যথা বা জটিলতা অনেকাংশে কমাতে সক্ষম হবে। এছাড়া ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে এসময় তা ত্যাগ করতে হবে।চা-কফি বা কোমল পানীয় এর অভ্যাস ও এসময় পরিহার করতে হবে। দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন কোনোভাবেই নেয়া যাবে না।ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
আদর্শ ওজন আপনার গর্ভধারণ এবং প্রসবকালীন সময়কে অনেক সহজ করে তুলতে সহায়ক। অতিরিক্ত মোটা বা অতিরিক্ত পাতলা শরীর সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নানা জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।তাই সন্তান ধারণের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আদর্শ ওজন ধারণ করুন।
নিয়মিত ফলিক এসিড গ্রহণ করুন:
এটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা আপনার শিশুর অনেকগুলো জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সহায়ক। উপরন্তু এটি আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের কোষ গঠন করে। যা গর্ভকালীন প্রথম ১২ মাসেই গঠিত হয়। এজন্য প্রচুর শাক-সবজি এবং টক জাতীয় ফলমূল খেতে হবে। কেননা এগুলো ফলিক এসিডের চাহিদা পূরণ করে।গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভাবস্থার ৪ মাস পূর্ব থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্টারী হিসেবে ভিটামিন এবং ফলিক এসিড গ্রহণ ভালো ফলাফল দেয়।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
গর্ভধারণের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এসময় আপনার যে কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যার সমাধানের জন্য চিকিৎসকের সাহায্য নিন। পাইলস বা দাঁতের সমস্যা থাকলে সেগুলো আগেই সারিয়ে তোলার চেষ্টা করুন।কেননা গর্ভকালীন সময়ে ছোট সমস্যাগুলো অনেক বড় জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। আর প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন বা টিকা গর্ভধারণের পূর্বেই নিয়ে নিন বাচ্চার সুস্থতার জন্য। সর্বোপরি গর্ভধারণের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে চিকিৎসক থেকে ধারণা নিয়ে নিন।
মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করুন:
মা হওয়া একদিকে যেমন পূর্ণতার অন্যদিকে তেমনি ত্যাগের এবং নতুন দায়িত্ববোধের ও জন্ম দেয়। তাই সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করুন। নিজেকে সৃজনশীল কাজে যুক্ত করুন। সন্তান লালন-পালনের জন্য করণীয় সম্পর্কে অবগত হতে চেষ্টা করুন।অনাগত সন্তানের জন্য সঞ্চয় করুন। নতুন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর সকল প্রক্রিয়া শুরু করে দিন এখন থেকেই।