টেনশন বা দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনে মানসিক চাপ এখন যেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকাল টেনশন ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন ব্যাপার! বিভিন্ন গবেষণার ফলে প্রমাণিত হয়েছে, মানসিক চাপ থেকেই অনেকে নানা রোগে আক্রান্ত হন তারমধ্যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতিসাধন হয় বেশি। তাই শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে মানসিক চাপ মোকাবিলা করা খুবই জরুরি। আজ এই নিয়েই আপনাদের জন্য আমাদের আয়োজন। আসুন জেনে নিই মানসিক চাপ থেকে মুক্তির কয়েকটি সাধারণ সহজ ও ফলপ্রসূ উপায় –
বন্ধুত্ব করুন
আমরা সবাই পরিচিত “Sharing is caring”এই কথাটির সাথে। তাই আপনার মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তান বা বন্ধু কিংবা কাছের মানুষের সঙ্গে সময় কাটান। আপনার দৈনন্দিন মানসিক চাপের কথা তাদের সাথে শেয়ার করুন। নিজের গভীর উদ্বেগের কথাগুলো পরিবারের কাছে বলে নিজেকে হাল্কা করুন। দেখবেন, মানসিক চাপ অনেকাংশে কমে গেছে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মানসিক চাপের আধিক্য অনেকাংশে হ্রাস করা যায়।
‘না’ বলতে শিখুননা বলতে পারা অনেক বড় একটি গুন। প্রয়োজনে না বলতে শিখুন। অনেক সময় নিজেদের সীমাবদ্ধতা ভুলে গিয়ে সমাজ ও পরিবারের মন রাখার জন্য নানা ধরনের কাজ করতে রাজি হই। যা একদমই ঠিক নয়। এতে বরং অযথা চাপ সৃষ্টি হয়। তাই যদি কোনো কাজে মন সায় না দেয় তবে তা পরিষ্কারভাবেই জানিয়ে দিন। এতে জীবনে কম হতাশা দেখা দেয় এবং অনেক মানসিক সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
বিরতি নিন
প্রতিদিনের ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মাঝে মাঝে বিরতি নিতে পারেন। কারণ মানসিক চাপের কারনে যে হতাশার সৃষ্টি হয় তার প্রভাব কিন্তু সম্পূর্ণ জীবনযাত্রার উপরেই পড়ে । এর জন্য পরিবার বা বন্ধু বান্ধবদের যেতে পারেন ‘লং ড্রাইভ’য়ে বা কোনো ছোট ছুটিতে। বা আপনি যা করতে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেন তা-ই করার চেষ্টা করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুনমানসিক চাপ, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থেকে ব্যায়াম কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উদাহরণস্বরুপ শ্রমিকেরা কিন্তু সাধারণ মানুষ অপেক্ষা টুকটাক চিন্তা ও কম উদ্বেগে ভোগেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা মেডিটেশন, নিয়মিত ইয়োগা, দৌড়ানো, সাইক্লিং কিংবা নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটেন তারা সত্যিই শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ থেকে দূরে থাকবেন।
নির্ভুল হওয়ার চিন্তা বাদ দিন
সাধারনণত যারা সবসময় শুদ্ধ চরিত্রের অধিকারী হতে চান তারাই পরে হৃদরোগ ও মানসিক চাপ ও উদ্বেগে বেশি ভোগেন। মানুষ মাত্রই ভুল করবে। তাই ‘পারফেক্ট’ হওয়ার দরকার নেই। জীবনে সফলতার পাশাপাশি নিজেকে ব্যর্থতার জন্যও প্রস্তুত রাখতে হবে। জীবনে ব্যর্থতা এলেও তা থেকে ঘুড়ে দাঁড়াতে ও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে এ ধরনের মনোভাব রাখতে হবে।
ঠিক মতো খাওয়া ও সময়মতো ঘুমানঅধিক খাওয়া ও ঘুম শুধুমাত্র শরীরেরই ক্ষতি করে না তা মানসিক দুশ্চিন্তাও বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছের মত খাবার খান যা মনে স্থিরতার সাথে সাথে মানসিক চাপ দূর করতে ও রাতে ভালো ঘুম আনতে ভালো ভূমিকা রাখে।