বলুনতো একজন নারীর সুস্বাস্থ্য এবং তার ভবিষ্যৎ গর্ভধারণের লক্ষ্মণ কিসে প্রকাশ পায়? বস্তুতঃ নিয়মিত এবং সময়মতো মাসিকই জানান দেয় নারীর ভবিষ্যৎ মাতৃত্ব ও সুস্বাস্থ্যের।
মাসিক একটি প্রাকৃতিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যার মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সকল নারীকেই যেতে হয়। স্বাভাবিকভাবে বয়ঃসন্ধিকাল থেকে এর শুরু হয়। সাধারণত ৯ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের ক্ষেত্রে প্রতিমাসে ২৮ থেকে ৩৫ দিন পরপর মাসিক হয়ে থাকে। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটে থাকে। তাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত এবং ত্রুটিযুক্ত মাসিকের সমস্যা দেখা দেয়। পক্ষান্তরে যা তার শারীরিক বিভিন্ন শারীরিক প্রতিই ইঙ্গিত করে থাকে।
চলুন অনিয়মিত মাসিকের সমস্যার কারণগুলো এবং এর প্রতিকার সম্বন্ধে জেনে নেয়া যাক।
হরমোনের সমস্যা :
হরমোনাল কারণে অনেক সময় মাসিকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন ধরণের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, যেমন- পিল,ইনজেকশন,প্যাচ ইত্যাদি ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা বেশি দেখা যায়। এক্ষেত্রে এসব পদ্ধতি অবলম্বনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া এবং সাবধানতার বিকল্প কিছু নেই।
ফাইব্রয়েডস:
মূলত মাসিকের স্বাভাবিক চক্রকে বাধাগ্রস্ত করে এই ফাইব্রয়েডস।এটা একধরনের জরায়ুর টিউমার যা জরায়ুতে বৃদ্ধি পেয়ে মাসিকের স্বাভাবিক পথকে বাধাগ্রস্ত করে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায়, চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
মানসিক ও শারীরিক চাপ:
লম্বা সময় ধরে মানসিক ও শারীরিক চাপ অনিয়মিত মাসিক এবং ক্ষেত্রবিশেষে ত্রুটিযুক্ত মাসিকের সমস্যার সৃষ্টি করে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক জীবনচর্চা এবং যথাসম্ভব দুঃশ্চিতামুক্ত থাকা এক্ষেত্রে নিয়মিত মাসিকে সহায়ক হয়।
ওজন:
ওজনের আধিক্য বা কম ওজন অনিয়মিত মাসিকের অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে। তাই উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন প্রয়োজন। ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুষম খাবার এবং নিয়মিত ব্যায়ামের বিকল্প নেই।
সাধারণত অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত হলে নিয়মিত মাসিকের ব্যঘাত ঘটে।এক্ষেত্রে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দিন পর ভারী রক্তপাত হয় এবং সেটি বেশ কিছুদিন চলে।
আবার সন্তান প্রসবের পরও মাসিক হতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। যদিও এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু অনেকে এটাকে অনিয়মিত মাসিক বলে আখ্যায়িত করে।
বয়স:
কৈশোরকালীন অথবা বয়ঃসন্ধি কাল এবং মাঝ বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে হরমোনাল ইমব্যালেন্সের ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। এটি পরবর্তীতে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যার সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারটা মোটেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।