নারীর এন্টি এজিং রূপচর্চার ধাপগুলো কেমন হওয়া উচিত?

মনের বয়সে আপনি যতই তরুণ হোন না কেন, আপনার ত্বকের ভাষাই কিন্তু আপনার শারীরিক বয়সের প্রতি আলোকপাত করবে। লোকে সেটাই বিশ্বাস করবে, যা চোখে দেখবে। কারণ কথায় আছে না, “আগে দর্শনধারী তারপর গুণবিচারী”। তাই নিজের ত্বককে প্রাণবন্ত ও সতেজ রাখতে ত্বকের যত্ন নিতে হবে বিশের পর থেকেই।

এন্টি এজিং এর লক্ষণসমূহ:

  • বাঙালি মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ত্বকে এজ স্পট বা তিলের প্রকোপ যখন থেকে বাড়তে শুরু করে ত্বক তখন থেকেই বাড়তি যত্নের প্রতি বার্তা দিতে থাকে।
  • আর নরমাল বা ড্রাই স্কিনের ক্ষেত্রে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ত্বকের শুষ্কতা কয়েকগুণ বেশি বৃদ্ধি পায়।
  • তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে যদিও শুষ্কতার চিহ্ন পাওয়া যাবে না।এক্ষেত্রে ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ততা প্রকাশ পাবে। পরবর্তীতে যা লোমকূপগুলোকে বড় করে তুলবে।
  • ঠোঁটের শুষ্কতা বৃদ্ধি এবং তাতে লাইন পড়ে যাওয়াও বয়সের ছাপ পড়ে যাওয়ারই লক্ষণই প্রকাশ করে।
  • নখ আর চুল সবচেয়ে বেশি বার্তা বহন করে আপনার ত্বকের বয়সের ছাপের জানান দিতে। কিভাবে? নখ এবং চুলের ভাঙন আর শুষ্কতার শুরু মানে আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তো শুরু করেছে।

এন্টি এজিং রূপচর্চার যত কথা

ত্বকের বয়স ধরে রাখতে ঠিকমতো ত্বকের যত্নের বিকল্প কিছুই নেই। প্রতিদিন এক্ষেত্রে একটি রুটিন কেয়ার অনুসরণ করা উচিত। বলুন তো কেমন হওয়া উচিত সে রুটিন কেয়ার?

বিশের পর থেকেই সাধারণত বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। তাই বিশের পর থেকে ত্বকের যত্নের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে। ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। মেকআপ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। ভারী মেকআপ নিলে দ্রুত এবং সঠিকভাবে তা তোলার ব্যবস্থা করতে হবে। আর ভালো মানের মেকআপ সামগ্রী ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে।

দিনে বা কোথাও ঘুরতে যাবার আগে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ত্বকে দিতে হবে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে নাইট সিরাম ত্বকে ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।এছাড়া রোদ থেকে ত্বককে বাঁচাতে SPF 40+ PA +++ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ক্লিনজিং এবং টোনিং অবশ্যই নিয়মিত করুন ত্বককে প্রাণবন্ত ও সতেজ রাখতে।
ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি ফেইসপ্যাক ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী। ৬ মাস পর পর আয়ুর্বেদিক ফেসিয়াল ও খুব ভালো ফল দিতে পারে।

ত্বকের বলিরেখা সর্বপ্রথম কোথাও পরিলক্ষিত হয় বলুনতো? হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন চোখের চারপাশে। তাই নিয়মিত এখানে পর্যাপ্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। আলমন্ড অয়েল, টি ট্রি এক্ষেত্রে খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।এছাড়া বিভিন্ন ধরণের আই ক্রিমও এখানে বাজারে পাওয়া যায়। সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের রুক্ষতা বা চুল ভেঙে পড়া একটা কমন সমস্যা। বয়সের সাথে সাথে এ সমস্যার মাত্রাও বাড়তে থাকে। অধিক হারে চুল পড়ার জন্য অনেক সময় চিকিৎসকেরও শরণাপন্ন হতে হয়। তাই প্রতিরোধের আগে প্রতিকার গড়ে তোলাই শ্রেয়। নিয়মিত মাথার স্ক্যাল ম্যাসেজ করুন তেল দিন।
সপ্তাহে অন্তত একবার কোনো ভালো হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন।ঘরে তৈরি হেয়ারপ্যাক এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যতদূর সম্ভব বাজারের হেয়ার প্রডাক্ট থেকে দূরে থাকুন। চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ক্যামিকেল সমৃদ্ধ সব প্রডাক্ট ব্যবহার বন্ধ করুন। রিবন্ডিং বা চুলের কালার চুলের স্বাস্থ্যকে নষ্ট করে। প্রাকৃতিক নির্যাসসমৃদ্ধ সব পণ্য চুলের জন্য ব্যবহার করুন।

অন্ততপক্ষে মাসে একবার নখে পেডিকিওর মেডিকিওর করুন। নখের জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ক্যামিকেল জাতীয় পণ্য ব্যবহার থেকে নখকে বিরত রাখুন।

ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতে এন্টি এজিং রূপচর্চার শুরু তবে শুরু করে দিন আজ থেকেই।

Comments (0)
Add Comment