একজন মানুষ তার জীবন পরিক্রমার প্রতিটি অধ্যায় যে সুখে ভরে থাকবে এমনটা নয়। আমরা সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, ভালো-মন্দ এসব অভিজ্ঞতা নিয়েই বেড়ে উঠি। এবং এগুলোর প্রত্যেকটি অভিজ্ঞতাই একজন মানুষকে পরিপূর্ণ করে গড়ে তুলে। তার মানে এই নয় যে দুঃখ, হতাশা বা বিষন্নতা চলে আসলে আমরা তা আঁকড়ে ধরে রাখবো। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তা দূরীকরণের জন্য বাকিটা আমাদের কার্যকলাপের উপর নির্ভর করবে। এইসব বিষন্নতা এবং হতাশা আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকলে মন এবং মানসিকতার সাথে সাথে আমাদের শরীরের উপর এর প্রভাব পড়ে। এর পরিত্রাণের একমাত্র এবং সবচেয়ে কার্যকরী উপায় আপনি নিজেই। শারীরিক কর্মকাণ্ড, জীবনযাপনের পদ্ধতি এবং আপনার নিজ চিন্তাভাবনার উন্নতি ঘটানোর মাধ্যমে আপনি এই বিষন্নতা দূর করতে পারেন।
বিষন্নতার কারণ হিসেবে কতকগুলান বিষয় জানা যায়। যেমনঃ আপনার অতীত কোন ঘটনা যার জন্য আপনি হতাশায় ভুগছেন কিংবা পারিবারিক কোনো ইতিহাস, আপনার ব্যক্তিত্ব ও শারীরিক অসুস্থতাও একটা অন্যতম কারণ হতে পারে। এছাড়া ব্যক্তিগত কিছু অসংগতি যেমন- ধুমপান, মদ্যপান এবং অপর্যাপ্ত ঘুম এগুলোও অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যায়।
তাই যেহেতু এটি একটি মানসিক ব্যাধির মতো সেহেতু এটি প্রতিকারের চেষ্টা নিজ থেকেই আসতে হবে। আপনি আপনার নিজেকে সাহায্য না করলে আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মকে তা বাধাগ্রস্ত করবে।
তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক এরকম কার্যকরী কিছু উপায় যা আপনি নিজে থেকেই করতে পারবেন এবং বিষন্নতা থেকে মুক্তি পাবেন।
উপায় গুলো নিম্নরূপঃ
১.ধৈর্য্য ধরুনঃ
যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য যেমন ধৈর্য্য ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ঠিক তেমনি আপনি আপনার হতাশা এবং বিষন্নতা দূরীকরণের জন্যেও কিছুটা সময় নিন, ধৈর্য্য ধারণ করুন এতে করে হতাশা থেকে নিজেকে আস্তে সরিয়ে আনতে পারবেন। আপনি নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন আর এটা চিন্তা করুন যে সবকিছুর একটা সমাধান রয়েছে আপনার এই অবস্থা বা পরিস্থিতি কিছু সময়ের জন্য মাত্র। সময়ের সাথে সাথে আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তাই চেষ্টা করুন এই সময়টায় ধৈর্যসহকারে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে।
এখনকার সময়ে আমরা অনেকেই সময়মতো এবং পর্যাপ্ত সময় দেই না ঘুমের জন্য। বিষন্নতার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ঘুমের অভাব। আপনাকে অবশ্যই সময়মত এবং পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। ঘুমের কারণে যে শুধুমাত্র শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায় এমন নয় ঘুমের ব্যাঘাতের জন্য আমাদের বিভিন্নরকম মানসিক অবসাদ এবং বিষন্নতা দেখা যায়। তাই এখন থেকে প্রতিদিন কমপ্লেক্সের আট ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে আপনি খুব সহজেই বিষন্নতা দূর করতে পারবেন।
৩.সঠিক এবং পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুনঃ
সঠিকভাবে খাদ্য গ্রহণের ফলে এই রোগ অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই উপযুক্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের একটা অভ্যাস নিজের ভেতর গড়ে তুলুন। ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ডি এবং আয়রনযুক্ত যেসব খাবার রয়েছে সেগুলো খেতে পারেন। এগুলো আপনার শরীর এবং মনকে ভাল রাখবে।