স্বাস্থ্য যেমন সকল সুখের মূল ঠিক তেমনি মানসিক সুস্থতা অনেক বেশি দরকার। আমরা সবসময় দৈহিক এবং শারীরিক সুস্থতা নিয়েই আলোকপাত করে থাকি কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য হচ্ছে স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার মৌলিক উপাদান এ কথাটি আমরা প্রায়শই ভুলে যাই। সত্যি কথা বলতে একজন ব্যক্তির মানসিক সুস্থতা ছাড়া কোনভাবেই তিনি পুরোপুরি ভাবে সুস্থ নন। আমরা এর গুরুত্ব আসলে অনুধাবন করতে পারি না কিংবা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে চাই না। এই মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা নিয়ে আমাদের সচেতনতা একেবারে কম এবং সীমিত পরিসরে। জ্ঞানের অপ্রতুলতা এবং কিছু কিছু কুসংস্কার এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত করে থাকে। তাই এই বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে, জানার আগ্রহ থাকতে হবে এবং অনুধাবন করে সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে তবেই আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন সম্ভব।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এরকম কিছু কার্যকরী উপায় যা আপনাকে মানসিকভাবে সুস্থ, স্বাভাবিক এবং সুন্দর রাখতে সহায়তা করবে। উপায় গুলো নিম্নরূপঃ
১.সবসময় ইতিবাচক বলুনঃ
আপনি নিজেকে নিয়ে কিভাবে ভাবছেন তা আপনার বোধের উপরে একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলে। তাই সবসময় চেষ্টা করুন প্রত্যেক বিষয়ে একটা শক্ত এবং পাকাপোক্ত ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতে। এতে করে আপনি মানসিকভাবেও একরকম প্রশান্তি অনুভব করবেন যা কিনা আপনার আমার মানসিক সুস্থতার সহায়ক।
২.শরীরচর্চা করে নিনঃপ্রতিদিন চেষ্টা করুন দিনের একটা সময় ব্যায়াম করতে। আমরা হয়তো বা অনেকেই ভেবে থাকি যে ব্যায়াম করার মাধ্যমে শুধুমাত্র দেহের পেশি উন্নত হচ্ছে কিন্তু ধারণাটা ভুল। শশরীরচর্চা করার ফলে একই সাথে আপনি যেমন সুঠাম এবং সুন্দর দেহের অধিকারী হবেন তেমনই আপনার মানসিক সুস্বাস্থ্য শরীরচর্চার উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। প্রতিদিনের এই শরীরচর্চা আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোতে উদ্দীপনার সঞ্চার করে ফলে আমাদের মানসিক দক্ষতা আগের থেকে অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাই এখন থেকে সকালে উঠে কিংবা দিনের যে কোন একটু অবসরে খানিকটা শরীরচর্চা করে নিন।
৩.অনুভূতি লিখে রাখুনঃআপনার নিশ্চয়ই এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা কিনা আপনার সুস্থ থাকা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। যেই জন্য আপনি সুখ কিংবা দুঃখ অনুভব করছেন। এরকম বিষয়াদি লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করুন। একটি দৈনন্দিন কৃতজ্ঞতা তালিকা তৈরী করে ফেলুন।
৪.সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার খানঃআপনার খাদ্যাভ্যাসের উপর আপনার দৈহিক এবং মানসিক সুস্থতা অনেক বেশি নির্ভরশীল। তাই কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এবং কম কম করে ঘন ঘন সবুজ শাকসবজি এবং ফলফলাদি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এইসব পুষ্টিকর খাবার আপনার মেজাজকে উন্নত রাখতে সাহায্য করবে।
৫.অন্যকে সাহায্য করুনঃসবসময় নিজের ভিতরে মানুষের বা অন্যের উপকার করার একটা মনোভাব রাখুন এবং সুযোগ পেয়ে গেলে তা কাজে লাগিয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটি আপনার নিজের একটা আত্নসম্মান বোধ তৈরি করার দুর্দান্ত উপায়। আর এর সাথে সাথে আপনার মানসিক জীবন অনেক বেশি সমৃদ্ধ এবং প্রসারিত হবে। তাই এখন থেকে কারো উপকার করার সুযোগ পেলে আর হাতছাড়া করবেন না।